কমবেশি আমাদের অনেকের মনেই বিজনেস করার একটা সুপ্ত বাসনা থাকে। কখনো চায়ের আড্ডায় বা ভবিষ্যৎ আলোচনায় আমরা ব্যবসার আলোচনা তুলে আনলেও অনেক সময় তা বাস্তবতার মুখ দেখে না শুধুমাত্র কিছু ভালো বিজনেস আইডিয়া এবং পুজির অভাবে। সফল ব্যবসার প্রথম ধাপ হল একটি পারফেক্ট বিজনেস আইডিয়া। কিন্তু বিজনেস আইডিয়ার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব।
বিজনেস আইডিয়া! আমাদের সমাজে সব থেকে সহজে পাওয়া যায়। আপনি যে কাউকে জিজ্ঞেস করেন না কেন, সবার কাছেই কোন না কোন বিজনেস আইডিয়া আছে।
কিন্তু কাজে লাগানোর মত বিজনেস আইডিয়া খুব কমই পাওয়া যায়। সমাজের এই চিত্র ইন্টারনেট জগতেও প্রভাব ফেলেছে।
ইন্টারনেটে প্রচুর আর্টিকেল কাছে বিজনেস আইডিয়া নিয়ে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই পুরনো হয়ে গিয়েছে বা বাজারে প্রতিদ্বন্দী অনেক। সত্যিকারের বাজার এনালাইসিস করে না করেই দেয়া -বিজনেস আইডিয়া কখনো সফল হতে পারে না।
পুজি+ আইডিয়া+ টেকনিক= সফল বিজনেস

সফল ব্যবসা সম্পাদনা করতে পুজি, আইডিয়া এবং বিজনেস টেকনিক তিনটি জিনিসই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই বর্তমান বাজার পর্যালোচনা করে আমরা বাছাইকৃত কিছু ক্যাটাগরি তে আমাদের বিজনেস আইডিয়া গুলো সাজিয়েছি। এই ক্যাটাগরি গুলো হলঃ
- উৎপাদনমুখী বিজনেস আইডিয়া।
- প্রোডাক্টমুখী বিজনেস আইডিয়া।
- সার্ভিসমুখী বিজনেস আইডিয়া।
- অনলাইন বিজনেস আইডিয়া।
কম পুঁজির বিজনেস আইডিয়া
যেহেতু বিজনেস আইডিয়া গুলো আমরা নতুন ব্যবসায়ীদের জন্যই তালিকা করেছি তা আমরা অল্প পুজি ভিত্তিক আইডিয়া গুলোকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছি। চলুন জেনে আসা যাক কিছু অল্প পুজির বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কেঃ-
১. উৎপাদনমুখী বিজনেস আইডিয়া
বর্তমানে যে সকল ব্যবসা অত্যন্ত সফল তাদের বেশিরভাগই উৎপাদনমুখী। উৎপাদনমুখী ব্যবসা শুধুমাত্র ব্যক্তি খাতেই লাভজনক নয় দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রেও ভুমিকা রাখে। আপনি যদি উৎপাদনমুখী ব্যবসায়ে আগ্রহী হন তাহলে নিজের তালিকাটি আপনার ভবিষ্যৎ বিজনেস আইডিয়া খুজে নিতে সাহায্য করবে।
১. বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ
বর্তমানে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ বিশ্ব জুড়েই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সবথেকে বেশি জনপ্রিয় থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং চীন। অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশে এখনো বায়োফ্লক শুরু হয়নি। বায়োফ্লক শব্দটি অনেকের কাছেই নতুন মনে হতে পারে। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ টেকসই এবং কম খরচ এবং কম পরিসরে সর্বোচ্চ উৎপাদন নিশ্চিত করে।
বায়োফ্লকে ঘরের আঙ্গিনায় বা ছাদে পানির ট্যাংকিতে অধিক ঘনত্বে মাছ উৎপাদন করা যায়। এতে অল্প জমি ও অল্প পানিতে মাছ উৎপাদন করা সম্ভব। পানির গুণাগুণ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করার কারণে মাছ মারা যাওয়ার হার কম এবং বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রিত।
“যাকে বলা যায় ঘরের ভিতর মাছের কারখানা “
অনেকেরই মাছ চাষ নিয়ে আইডিয়া নাই তারা বিজনেস ভীত হওয়ার কিছু নেই। সারাবছরই বায়োফ্লক নিয়ে বিভিন্ন কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বায়োফ্লকের উপকরণঃ
- ট্যাংক
- সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ
- প্রোবায়োটিক
- এয়ার পাম্প
- টিডিএস মিটার
- পিএইচ মিটার
- ডিও মিটার
- অ্যামোনিয়া টেষ্ট কিট
- থার্মোমিটার
কেন বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করবেন?
- সেট-আপ খরচ অপেক্ষামূলক কম।
- পানি বদলানোর হার কম।
- খাবার এর পরিমাণ কম লাগে।
- পানির দুর্গন্ধ কম হয়।
- কম পরিসরে অধিক উৎপাদন।
- একবার সেটিং করলেই নিয়মিত চাষ করা সম্ভব।
- মাছের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রিত।
- পানির গুনাগুণ নিয়ন্ত্রিত তাই মাছের মৃত্যু হার কম।
- সবসময় মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা যায় তাই রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- নিজের চাষ জমি লাগে না, ঘরের আঙ্গিনায় অথবা ছাদেই করা যায়।
কি কি মাছ বায়োফ্লক পদ্ধতিতে চাষ করা যায় ?
- চিংড়ী
- তেলাপিয়া
- রুই
- মাগুর
- শিং ইত্যাদি
কখন আপনার জন্য বায়োফ্লক লাভজনক হয়ে দাঁড়াবে ?
আপনার এলাকায় যদি জলাশয় বা মাছ চাষের জমির পরিমাণ কম হয়ে থাকে তবে মাছের উৎপাদন ও অবশ্যই কম। পাশাপাশি মনে রাখবেন যে মাছের চাহিদা বাজারে সারা বছরই থাকে। আপনি যদি আপনার এলাকায় মাছ উৎপাদন শুরু করতে পারেন তবে আপনার নিজ এলাকায় মাছের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন।
অনেক সময় পাশের এলাকা বা দূর এলাকা হতে মাছ পরিবহণ করে এনে বাজারে বিক্রয় করা হয়। যদি এমন এলাকায় আপনি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে চাষ শুরু করতে পারেন বাজার চাহিদা বুঝে তবে স্থানীয় বাজারে পাইকারী সরবরাহকারিও হয়ে উঠতে পারেন যা বিস্তর লাভজনক।
অথবা আপনার এলাকায় যে মাছের চাহিদা বেশি বা বাজারদর অতিরিক্ত বেশি সেই মাছ চাষ করেও লাভবান হতে পারেন, যেমন চিংড়ি মাছের চাহিদা যেমন বেশি বাজারদর ও বেশি, চিংড়ী চাষ করে লাভবান হওয়া যাবে।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে চাষের জন্য দেশে বিভিন্ন সময় স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এবং আপনার নিকটস্থ মৎস্য দফতর থেকেও জানতে পারেন বিস্তারিত।
স্বল্প পুজির বিজনেস আইডিয়া শিরোনামের ব্লগ সিরিজে ধারাবাহিক ভাবে বায়োফ্লক এর বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে জানতে চোখ রাখুন।
২. সৌখিন পশু-পাখি পালন
অধিকাংশ মানুষেরই সৌখিন পশু-পাখির প্রতি অনুরাগ রয়েছে। আমরা যদি শহরাঞ্চলের দিকে তাকাই তবে দেখতে পাই অনেকেই পাখি, বিড়াল পালনের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেন। যারা পাখি-পালন বা বিড়াল পোষেন তারা ভালবেসেই এই কাজ করেন এবং পোষ্য প্রাণীর স্বাস্থ্য সচেতন সকলেই।
দোকানে যে সকল পোষ্য প্রাণী বিক্রয় করা হয় তাদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির নিশ্চয়তা থাকে না। তাই সকলেই খোজে নিরাপদ খামারী। খামারী না পেয়ে তারা দোকান থেকেই নিতে বাধ্য হন।
বিদেশি পোষ্য পাখি এবং বিড়ালের ব্রিডিং ব্যবসা এক্ষেত্রে লাভজনক হতে পারে। আমরা যদি বাজার অনুসন্ধান করি তো দেখতে পাই বাজেরিগার, প্রিন্স , লাভ বার্ড, ফিঞ্ছ , ঘুঘু, ককাটেল পাখির যথেস্ট চাহিদা রয়েছে। এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষনের মাধ্যমে ৬ মাসেই এদের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব।
যা বিক্রি করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন সম্ভব। যেমনঃ ককাটেল পাখির দাম প্রাম ৪০০০-৮০০০ টাকা। প্রিন্স পাখির জোড়া প্রতি ৫০০-৬০০ টাকা। ব্রিডিং সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানই পারে আপনার ব্যবসায়ের নতুন দিগন্ত খুলে দিতে।
এই বিজনেস আইডিয়াটি সফল করতে প্রয়োজনীয়ঃ
- পশু পাখির প্রতি ভালবাসা।
- নিজের খামার এর পর্যাপ্ত মার্কেটিং, কারন মানুষ যদি নাই জানতে পারে তাহলে কিনবে কিভাবে!
- নিজের ব্যবসায়িক পরিচিতি বৃদ্ধিতে ফেসবুক ভাল ভূমিকা পালন করতে পারে।
- পশু পাখির সঠিক রক্ষণাবেক্ষন।
- পর্যাপ্ত জ্ঞান আহরণ।
পাখি বাদে অন্যান্য প্রাণীর ভিতরে আছে উন্নত জাতের কুকুর এবং বিড়াল পালন।
জার্মান স্নিচ কুকুর বিক্রয় হয় প্রায় ৬০০০-২০,০০০ টাকা মূল্যে। পার্সিয়ান কুকুর এর দাম ৩০,০০০-৪০,০০০ টাকা প্রায়। এক্ষেত্রে দুটি প্যারেন্ট কুকুর এর ব্রিডিং থেকে আগত বাচ্চা বিক্রয় করে আপনি লাভবান হতে পারেন।
আমাদের দেশে পোষা প্রাণীর ভিতরে বিড়াল অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিড়ালের জাতের ভিতরে জনপ্রিয় জাতের নাম পারসিয়ান/ ফার্সি বিড়াল। এই জাতের বিড়াল প্রায় ৫০০০ টাকার অধিক মূল্যে বিক্রয় করা সম্ভব। এছাড়াও শংকর জাতের বিড়ালের ও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। এক্ষেত্রেও ব্রিডিং এর মাধ্যমে বাচ্চা উৎপাদনেই লাভ করা সম্ভব।
প্রত্যেকটি শহরাঞ্চলেই এমন কিছু মানুষ আছেন যারা পশু-পাখি পালনে আগ্রহি কিন্তু উচ্চমূল্য এবং সহজল্ভ্য না হওয়ায়, তারা পারছেন না।
৩. মাশরুম চাষ
মাশরুম খুব পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু। দেশের বড় বড় হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট গুলোতে মাশরুমের চাহিদা রয়েছে। বিদেশেও মাশরুমের চাহিদা ব্যাপক। এক্ষেত্রে মাশরুম শুকিয়েও রপ্তানি করা সম্ভব।
মাশরুমের খাদ্যগুন সম্পর্কে যারা জানে তারা সবাই চায় মাশরুম খাবার হিসেবে গ্রহণ করতে। কিন্তু বাজার চাহিদা হিসেবে মাশরুম বাজারে উপস্থিত নেই। তাই এক্ষেত্রে ব্যবসা করে সফল হওয়ার ব্যাপক সুযোগ বিদ্যমান আছে।
কেন করবেন মাশরুম চাষ?
মাশরুম চাষ করতে কৃষি জমি আবশ্যক নয়। আপনি চাইলে ঘরের ভিতরে তাক করেও মাশরুম চাষ করতে পারেন। মাশরুম চাষে কোন টেকনোলজি লাগে না।
স্বল্প মূল্যে স্পন কিনে ঘরোয়া ভাবে চাষ শুরু করা সম্ভব। মাশরুমের কোন বীজ নেই। যা আছে তাকে স্পন বলা হয়। প্রতিটি স্পন থেকে প্রায় ২০০ গ্রাম মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব।

৫০০টি স্পন থেকে প্রায় ১০০ কেজি মাশরুম পাওয়া যায়। এবং প্রতি কেজি মাশরুমের মূল্য ১২০ টাকার অধিক। এখানে দামের তারতম্য হয় জাতের প্রকারভেদে।
আপনি মাত্র ৩০০০-৪০০০ টাকা মূলধন থেকেই শুরু করতে পারেন মাশরুম চাষ। ১০-১৫ দিনের মাঝেই নতুন ফলন আসা শুরু করবে।
চাষের জন্য ২০০টি স্পনের দাম পড়বে ২০০০ টাকা (আনুমানিক)এবং প্রাপ্তিস্থান- সাভার মাশরুম গবেষণা কেন্দ্র।
কিছু চাষযোগ্য জাতের নামঃ
- অয়েস্টার মাশরুম
- দুধ মাশরুম
- কান মাশরুম
- স্ট্র মাশরুম
- ইয়ার মাশরুম
চাষে প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- স্পন
- ছুরি
- গামলা
- ব্লেড
- পলিপ্রোপাইল ব্যাগ (২০-৩০ টাকা/ পিস)
- চা-চামচ
স্পন লাগানোর পর কোন প্রকার যত্ন নেয়ার প্রয়োজন নেই। এভাবে ৭ দিন পর পলিথিনটি সাদাটে রঙ হয়ে আসবে এবং ১০-১২ দিন এর মাঝেই নতুন মাশরুমের দেখা মিলবে।
৪. অরগানিক ফার্মিং বিজনেস
আমরা অধিকাংশই অরগানিক ফার্মিং সম্পর্কে ধারণা কম রাখি। কারণ অরগানিক ফারমিং বিজনেস আমাদের দেশে সেরকম ভাবে শুরু হয়নি এখনও। তবে উন্নত দেশগুলোতে অরগানিক ফারমিং বেশ জনপ্রিয় এবং লাভজনক।
অরগানিক ফার্মিং কি?
অরগানিক ফার্মিং হল জৈবিক পদ্ধতিতে উৎপাদন। যে উৎপাদন ব্যবস্থায় রাসায়নিক এর ব্যবহার করা হয়না। অরগানিক ফার্মিং এ উৎপাদিত দ্রব্য সাস্থ্য সম্মত এবং উৎপাদন খরচও কম।
কেন করবেন অরগানিক ফার্মিং?
যত দিন যাচ্ছে মানুষ তত স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছে। এই ভেজালের বাজারে সবাই চায় যাচাই-বাছাই করে খাটি জিনিস খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে। খাটি জিনিসের প্রতি সবারই আলাদা টান রয়েছে।
বিদেশী বাজার পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সামনের দিনগুলিতে শুধুই অরগানিক ফার্মিং এর জয় জয়কার। তাই বাজারে প্রতিদ্বন্দী আসার আগেই আপনি ব্যবসা শুরু করে দিন।
অরগানিক ফার্মিং বিজনেস আইডিয়াটির উদ্ভাবন হয়েছে বাজার চাহিদা থেকে। আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে অরগানিক ফার্মিং এর ব্যাপারে আমি উদাহরণ সহ উল্লেখ করছি নিচে। তার আগে চলুন জেনে নিই আপনি আসলে কি উৎপাদন করবেন অরগানিক ফার্মিং বিজনেস এ।
বর্তমান বাজারে ফার্মের মুরগির এবং ডিমের চাহিদা ব্যাপক। মানুষ পছন্দ করেও খায় আবার খাবার এর চাহিদা পুরণ করার জন্যেও খেতে বাধ্য হয়। কিন্তু আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন বিগত ২-৩ বছর মানুষ ফার্মের মুরগি এবং ডিম এর উপর বিরুপ মনোভাব প্রকাশ করছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশংকা থেকে।
এই সময়ে মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকি মুক্ত বিকল্প ব্যবস্থা পেলে সেদিকেই ঝুকে পড়বে। সম্পূর্ণ রাসায়নিক এবং এন্টিবায়োটিক মুক্ত ভাবে মুরগি্র মাংস এবং ডিম উৎপাদন করেন। তা পর্যাপ্ত মার্কেটিং এর মাধ্যমে বাজারজাত করেন। তবে সাধারণ মুরগি থেকে ১০-২০ টাকা বেশি মূল্য দিয়ে হলেও মানুষ স্বাস্থ্যকর জিনিসটিই কিনবে।
কিভাবে লাভবান হবেন অরগানিক ফার্মিং বিজনেস করে ?
- রাসায়নিক ব্যবহার করা লাগছে না বিধায় এই খাতে খরচ কম।
- রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম।
- অরগানিক প্রোডাক্টের মার্কেটিং করতেই হবে, যদি সাধারন মানুষ জানে তবেই বেশি বেচাকেনা হবে।
- বিজনেস কমিউনিটি মেইনটেইন করার মাধ্যমে। যেমন- বেশির ভাগ অরগানিক প্রোডাক্ট বাজারে বিক্রি হয় সুপারশপ গুলার মাধ্যমে।
- নিজের ব্র্যান্ড নাম এবং লোগো ব্যবহার করতে হবে।
সাধারণ মুরগির ডিমের দাম ( ১ ডজন)- ৭৫-১০০টাকা, সেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অরগানিক ডিমের দাম ডজন প্রতি- ওমেগা থ্রি প্লাস (২১০-২২৫) টাকা, কাজী ফার্ম (১৪০-১৫০) টাকা, প্যারাগন কিডস (১৯০-২০০) টাকা
২. অল্প পুজির প্রোডাক্টমুখী বিজনেস আইডিয়া
১. আইসক্রিম পার্লার
আইসক্রিম পছন্দ করেনা এমন লোক খুজে পাওয়া ভার। ছোট-বড় সকলেই কমবেশি আইসক্রিম পছন্দ করে । যদি আমরা পশ্চিমা বিশ্বের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই সেখানে আইসক্রিম বিজনেস আর কোন একক কোম্পানির একচেটিয়া বিজনেস নেই। বর্তমান সময়ে আইসক্রিম পার্লারের চল বেশি।
কেন বেশি?
এই প্রশ্নের উত্তর যদি আমরা খুজি তো দেখা যায় আইসক্রিম পার্লারে ভোক্তা তার পছন্দ মত ফ্লেভার এবং ডিজাইনের আইসক্রিম পাচ্ছে। তাদের পছন্দনীয় অর্ডারেই আইসক্রিম সারভ করা হচ্ছে।

কিভাবে লাভবান হবেন?
মানুষের দৈনন্দিন জীবন কাটে ব্যস্ততায়, সবাই চায় এই ব্যস্ততার ফাকে একটুখানি রিফ্রেশমেন্ট। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস এসকল কাজের চাপের ফাকে সবাই চায় একটু একঘেয়েমি কাটিয়ে উঠতে। এসকল ব্যস্ততম প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে ছোট জায়গা নিয়ে আইসক্রিম পার্লার করা সম্ভব।
অবশ্যই সেখানে বসার সুযোগ থাকতে হবে। এই ব্যবসার অন্যতম দিক হচ্ছে দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে কাস্টোমার এর চাপ থাকবে বেশি যেমন বিকেল এবং সন্ধ্যাবেলা।
এই ব্যবসায় আপনার মূলধন মার যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সেই হিসেবে নিরাপদ ব্যবসা ও বলা যায়। আর কিছু ব্যবসায়িক টেকনিক আপনার ব্যবসায়ের প্রসার বৃদ্ধিতেও সাহায্য করবে।
এছাড়াও বিশেষ দিনগুলোতে রেস্টুরেন্টের মত এখানেও ভিড় থাকা সম্ভব যদি ভালো পরিবেশ এবং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যায়। আইসক্রিম পার্লার একটি সময়োপযোগী বিজনেস আইডিয়া। কারণ আমাদের দেশে এই ব্যবসাটি এখনও প্রসার হয়ে পারেনি।
২. জুস স্টোর
জুস স্টোর নামটি শুনতেই আপনার চোখে অনেক ধরনের শরবতের ছবি ভেসে উঠেছে নিশ্চয়ই। সিজনাল বিভিন্ন ফলের জুসের ব্যবসা করাই যায়। আপনার মূলধনের উপরে ব্যবসার ধরন নির্ভর করে যদিও। আপনার হাতে ভাল পরিমাণ অর্থ থাকলে একটি রুম ভাড়া নিয়ে রেস্টুরেন্ট এর আদলে শুরু করতে পারেন এই ব্যবসা।

কেন করবেন এই ব্যবসা?
যে কোন ফলের সিজনে ফলটি সহজলভ্য থাকে এবং দামও থাকে কম। গরমকালেই আমাদের দেশে ফল বেশি পাওয়া যায়। আর তখন আবহাওয়া ও থাকে অতিরিক্ত গরম।
গরম থেকে একটু রেহাই পেতে সবাই নানা দিক বেছে নেয়, আর সেক্ষেত্রে আপনার লোভনীয় ঠাণ্ডা জুস অবশ্যই পছন্দের তালিকায় থাকবে যদি তা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো হয়। কম ইনভেষ্টে করার মত নিরাপদ একটি ব্যবসা। সাথে ক্রিয়েটিভও বলা চলে, কারণ মেনু আইটেম সিলেকশন বুদ্ধির সাথে করতে হবে। এমন মেনু করাই উচিত যেটা কম খরুচে এবং স্বাদে ভালো।
প্রতিবন্ধকতা
শীতকালে ফলের ভ্যারাইটি কম থাকে বাজারে। বরই , আমলকি, সফেদা এসকল ফলেই বাজার সয়লাভ হয়ে থাকে। তাই এসময়ে ব্যবসায়ে হালকা কমতি পড়তে পারে জুসের ভ্যারাইটির উপসস্থিতির অভাবে।
তবে বিজনেসে টেকনিক এবং ক্রিয়েটিভ বুদ্ধি দিয়ে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা পার করা সম্ভব।
৩. স্পেশিয়ালাইজড কফি শপ
আমাদের দেশে কফি শপ ব্যবসাটি সঠিক ভাবে গড়ে ওঠেনি। তাই বলে ভাববেন না যে দেশে কফির জনপ্রিয়তা কম। কফির জনপ্রিয়তা বুঝতে গেলে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে বিভিন্ন ইভেন্টের দিকে, সেখানে দেখবেন অসংখ্য মানুসের হাতে ওয়ান টাইম ইউজ কাপে কফি।
কফিশপ ব্যবসাটি লাভজনক কারন এখানে যন্ত্রপাতি খরচ খুবই কম পাশাপাশি আপনার ব্যবসার কাচামাল নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও নেই।
আমি এখানে “স্পেশিয়ালাইজড কফি শপ” শব্দটি ব্যবহার করেছি কারণ গতানুগতিক ধারার কফি ব্যবসায় সুবিধা করে উঠা কষ্টসাধ্য। আপনি যদি কয়েক ধরনের কফি রাখেন মেনু তে তবে বেশি লাভজনক হবে। পাশাপাশি আপনার শহরে /এলাকায় শুধুমাত্র কফির হরেক রকম আইটেম যদি আপনিই মজুদ করেন একমাত্র। তাহলে বিভিন্ন ধরনের কফির উৎস হিসেবে আপনি হয়ে উঠবেন স্পেশাল শপ।
ব্যাপারটি এমন হবে যে, কফির কথা ভাবলেই তাদের মাথায় আপনার কফি শপের কথাও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলে আসবে।
কফিশপ বিজনেস করতে গেলে মনে রাখা আবশ্যকঃ
কফিশপ এমন একটি স্থান যেটা তরুণদেরকেই বেশি টানে। কফিতে কফিতে আড্ডা ,গান, রিফ্রেশমেন্ট এগুলাই চায় তরুনসমাজ। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বসার স্থান নিশ্চিত করতে হবে। আর এমন জায়গা দোকান করার জন্য বাছাই করতে হবে যেখানে তরুণদের জনসমাগম বেশি হয়।
আপনি যদি কফি শপে ভাল আড্ডার পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারেন তবে ব্যবসা কম লাভজনক হয়ে দাঁড়াবে। কারন মানুষ এসব স্থানে যায়ই ভালো পরিবেশে একটু আলোচনা, গল্প, এবং আড্ডা দিতে।
স্বল্প-পুজিতে নিরাপদ বিজনেস আইডিয়ার ভিতরে কফিশপ দ্রুত লাভজনক একটি ব্যবসা। আপনি পার্ট-টাইম বা সাইড ব্যবসা হিসেবেও এটা চালাতে পারেন। সাধারণত এসব স্থানে বিকেল বা সন্ধ্যার সময়েই লকসমাগম বেশি হয়।
৪. মিনি সুপার শপ বিজনেস
সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস যদি এক জায়গাতেই পাওয়া যায় তাহলে মানুষ কে অনর্থক বাজারে বাজারে ঘুরবে! ঝামেলাবিহীন বাজারের জন্য সুপার শপই সেরা। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বর্তমানে দেশের অনেক স্থানেই সুপার শপ খুলতে দেখা যাচ্ছে।
সুপার শপ আধুনিক বাজার ব্যবস্থা। যেখানে চাল ,তেল, লবন, কাচাবাজার থেকে শুরু করে ক্রোকারিজ, বাচ্চাদের খেলনা সবই বিক্রি করা যায়। সুপার শপের ব্যবসায়িক ঝুকি অন্যান্য দোকানের মতই।
ব্যবসায়ে ঝুকি থাকবেই এটা স্বাভাবিক। এই ঝুকিকে পুজি করেই সাজাতে হবে বিজনেস প্ল্যান।
সুপার শপ ব্যবসায়ে সফল হতে গেলে প্রথমেই দরকার সঠিক স্থান নির্বাচন। সুপার শপ সব এলাকার সব ভোক্তাদের জন্য নয়।আমাদের সমাজে সুপার শপ সম্পর্কে কিছু প্রচলিত ধারণা আছে। যেমনঃ সুপার শপে দাম বেশি রাখা হয়, সুপার শপে দ্রব্যাদি কেশি দিন ফ্রিজিং করে রাখা হয়।
এই সকল ধারণা কাটায় ওঠার জন্য প্রথমেই যে এলাকায় সুপার শপটি করবেন সেখানে দরকার সঠিক পরিমাণ প্রচারণা। এক্ষেত্রে লিফলেট, পোস্টার এগুলা ব্যবহার করা যেতে পারে।
সুপার শপ পরিচালনার জন্য কিছু দক্ষ কর্মী প্রয়োজন। কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। কারণ তাদের ভালো ব্যবহারই নিশ্চিত করবে একজন ভোক্তা পরবর্তীতে আর আসবে কিনা।
অল্প পুজির বিজনেস আইডিয়ার ভিতর সুপার শপ সেভাবে পড়ে না কারন এটি শুরু করতে প্রায় ৮- ১০লক্ষ টাকার অধিক লেগে যায়। তবুও উল্লেখ করা হয়েছে কারণ সুপার শপ থেকে মাসে ৫০,০০০- ৬০,০০০ টাকাও আয় করা সম্ভব।
৫। গিফট শপ
প্রিয়জনকে বিশেষ দিনগুলোতে সবাই কিছু না কিছু উপহার দিতে চায়। আর সারাবছরই কিছু না কিছু বিশেষ দিন থাকেই। কখনো জন্মদিন,ভ্যালেন্টাইন, বিবাহবার্ষিকী অথবা নিছকই উপহার। সে হিসেবে বলতে গেলে উপহার বা গিফট এর চাহিদা সারাবছর।
গিফট শপ খোলার বিজনেস আইডিয়া নিয়ে বলতে পারেন এটি তো অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশে চলে আসছে। এখানে অল্প পুজিতে নতুন বিজনেস আইডিয়া আর কি হল! ~~~~~তার উত্তর এভাবে দেয়া যায়, বিজনেস আইডিয়া টি নতুন নয় তবে বিজনেস টেকনিকটি সময়োপযোগী।
প্রতিনিয়িত গিফট এর চাহিদা যেমন বেড়েছে, গিফট শপের ব্যবসার ধরণ ও বদলেছে। অল্প পুজিতে আপনার খোলা গিফট শপটি দোকানেও হতে পারে বা অনলাইনেও হতে পারে অথবা দুটিই হতে পারে। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আপনার হাতে বৃহৎ ব্যবসা ক্ষেত্র উপস্থিত।
সফলতার জন্য এবং মার্কেটে টিকে থাকার জন্য আপনাকে ইউনিক গিফট এর কালেকশন রাখতে হবে মার্কেট যাচাই করে এবং অনলাইনে মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার পরিচিতিও বৃদ্ধি করতে হবে।
এই বিজনেসের ক্ষেত্রে আপনাকে বাজারে ট্রেন্ডিং দিবস বা ইস্যু নিয়ে আপডেট থাকতে হবে। সাথে পুতুল বা ডল এর চাহিদা সারাবছরই থাকে। আপনি ছোট বড় মাঝারি সাইজের বিভিন্ন পুতুল কালেকশনে রাখতে পারেন। যা সাইজ ভেদে দাম পড়ে প্রায় ৩০ টাকা থেকে ৪,০০০- ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত।
বর্তমান সময়ে অনলাইনে খুবই জনপ্রিয় কিছু উপহার এর তালিকাঃ
- কাঠের ফ্রেমে ছবি খোদাই করা
- ডায়রির কভার পেজে খোদাই করানো
- গিফট বক্স
- ছবি প্রিন্টেড মগ
- চাবির রিং
বিজনেসে পুজির অবস্থাভেদে আপনি এই ইউটিলাইজড গিফট গুলোর ব্যবস্থা করতে পারেন সাধারন গিফট রাখার পাশাপাশি।
অল্প পুজির বিজনেস আইডিয়া হিসেবে মাত্র ১-২ লাখ টাকা ইনভেস্ট করে আপনি এই বিজনেসটি শুরু করতে পারেন। কর্মী রাখার প্রয়োজন নেই প্রায়। তবে বিজনেস টেকনিক এবং গিফট বাছাই করার ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ রুচিশীলতার পরিচয় দিতে হবে/
৩. অল্প পুজির সেবা ভিত্তিক বিজনেস আইডিয়া
১. হোম ডেলিভারি সার্ভিস
শহরাঞ্চলে হোম ডেলিভারি সার্ভিস সময়ের চাহিদামাত্র। এমনও অনেক পরিবার আছে যেখানে কর্তা গিন্নী দুজনেই চাকরি করেন বা ব্যস্ত থাকেন, বা সময়ের চাহিদা ভেদে আপনার শহরেই হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু করতে পারেন।
এই সেবার ভিতরে কাচাবাজার থেকে শুরু করে দৈনন্দিন সামগ্রী রাখতে পারেন। যা শুধুমাত্র আপনার শহরেই বা নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় সীমাবদ্ধ্ব থাকবে।
নিজ এলাকায় ব্যবসায়ের পর্যাপ্ত মার্কেটিং ই আপনার সাফল্য এনে দিবে। তবে শহর এলাকা বাদে অন্যান্য স্থানে এই ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব নয়।
হোম ডেলিভারি ব্যবসার মুলমন্ত্র মার্কেটিং এবং ব্যবহার। আপনার ভালো ব্যবহার ও সার্ভিস আপনাকে নিয়মিত গ্রাহক পেতে সাহায্য করবে।
২. ডে-কেয়ার সেন্টার বিজনেস
ডে কেয়ার সেন্টার হল সেই প্রতিষ্ঠান যেখানে বাচ্চাদের দেখাশোনা করা হয়। এই বিজনেস আইডিয়াটিও শহরাঞ্চল ভিত্তিক।
বাবা মা চাকুরি ক্ষেত্রে যাওয়ার কারণে তাদের সন্তানকে ডে-কেয়ার সেন্টারে রেখে যান, সেখানে খাওয়া-দাওয়া, বাচ্চাদের পরিচর্যা,পড়ালেখা প্রভৃতি দায়িত্ব পালন করা হয়ে থাকে।
ডে কেয়ার সেন্টার সৃজনশীল সেবামুলক প্রতিষ্ঠান। আদর্শ ডে-কেয়ার সেন্টার বানানোর জন্য বাচ্চাদের খেলাধুলা, ঘুমানোর এবং পড়ালেখার জন্য পৃথক স্থান প্রয়োজন।
সাফল্য লাভের জন্য ডে কেয়ার সেন্টারটি ভালভাবে ডেকোরেশন করা জরুরি। যাতে প্রথম দর্শনেই ভালোলাগা বোধ কাজ করে। দেখে যদি কারো ভালো লাগা বোধ কাজ না করে তবে কেউই তার সন্তানকে সেখানে রাখার জন্য উপযুক্ত এবং নিরাপদ মনে করবে না।
বড় পরিসরে ডে-কেয়ার সেন্টার পরিচালনার জন্য কয়েকজন নার্স এবং নিরাপত্তাকর্মীর প্রয়োজন রয়েছে। আপনি যত সুনিপুণ ভাবে সেন্টারটি পরিচালনা করবেন ততই আপনার নির্ভর যোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। যা আপনার ব্যবসার জন্য খুবই দরকারি কারণ এই ব্যবসায় যতটা মানুষ সেবা নিতে আগ্রহী হয় সবাই ভালো রেফারেন্স এর উপর নির্ভর করে।
৩. অফিস-বাসা বদল সার্ভিস
প্রতি মাসেই বহু মানুষ অফিস এবং বাসা বদল করে। এসময়ে সব বদলকারীই সন্ধান করে একটু কর্মঠ মানুষের। যার হাতে নিজের মালামাল এর স্থান বদল হবে নিরাপদ।
সঠিক মার্কেটিং এবং কিছু নির্ভর যোগ্য মানুষ যোগাড় করে আজই আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসার সবথেকে ভাল দিক বড় ধরনের প্রাইমারি ইনভেষ্টমেন্ট নেই।
আপনার যদি পিক-আপ বা মিনি ট্রাক থেকে থাকে তবে আরও লাভবান হবেন। এবং আপনার ব্যবসার প্রসার বৃদ্ধি পাবে তবে তা আবশ্যকীয় নয়। প্রয়োজনে এমন কোন পিক-আপের সাথে আপনি চুক্তি করে রাখতে পারেন। এই ব্যবসায় ঝুকি কম।
৪. জিমনেশিয়াম
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল। প্রত্যেকটি মানুষই স্বাস্থ্য সচেতন। গ্রামের মানুষ চলা ফেরা করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ পেলেও শহরে তার রেশ মাত্র নেই। শহরে আছে কিছু নামমাত্র পার্ক। জিমনেশিয়াম এমন একটি অল্প পুজির বিজনেস আইডিয়া, যে আইডিয়াটি ফলো করে বর্তমানে অনেক শহরেই সফলতার সাথেই জিমনেশিয়াম ব্যবসা চলছে।
জিমনেশিয়াম নাম শুনলেই আমরা অনেকেই যেমনটা ভাবি তা হল বডি বিল্ডিং করা। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। জিমনেশিয়াম হল ব্যায়াম করার স্থান যা আমার আপনার সকলের শরীর ফিট রাখতে সাহায্য করে। আর সুস্থ থাকতে ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা নিশ্চয়ই আপনি জানেন।শহরাঞ্চলেই জিমনেশিয়ামের চাহিদা প্রচুর।
কেন আপনি জিমনেশিয়াম এর বিজনেস করবেন?
- এককালীন ইনভেষ্টমেন্ট।
- কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা।
- তরুন সমাজের কাছে জিমনেশিয়ামের চাহিদা বেশি।
- অল্প পুজিতে বিজনেস শুরু করা সম্ভব।
- পরিচালনায় বেশি কর্মচারী লাগে না।
- ভালো জিম ইন্সট্রাকটর নিয়োগ করলে, জিমনেশিয়ামের জনপ্রিয়তা বাড়বে দ্রুত।
- ৩-৪ লক্ষ টাকার সেটআপেই বিজনেস শুরু করা সম্ভব।
৪. অল্প পুঁজির অনলাইন বিজনেস আইডিয়া
অনলাইন বিজনেস বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে করা যায়। অনলাইন বিজনেস মূলত যে বিজনেসের ক্রিয়াকলাপ অনলাইনে বা ইন্টারনেটেই ঘটে থাকে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে অনেক অনলাইন বিজনেস আইডিয়া ডেভেলপ হয়েছে।
অনলাইন বিজনেস আইডিয়া
অনলাইন বিজনেস আইডিয়া একটি বিস্তৃত ক্ষেত্র। তাই আমি এখানে সবটা আলোচনা না করে শুধুমাত্র অনলাইন বিজনেস আইডিয়া নিয়েই আলাদা একটি আর্টিকেল লিখবো।
এখানে শুধুমাত্র অনলাইন বিজনেস আইডিয়া গুলোর তালিকা দেয়া হোলঃ
- এসইও পরামর্শ
- ই-বুক লেখা
- অনলাইন কোর্স তৈরি
- বিজনেস ট্রেনিং
- ওয়েব ডিজাইন
- ফ্রিল্যান্সিং
- অ্যাপ ডেভেলপিং
- ইউটিউব মার্কেটিং
এগুলাই বর্তমানে কম পুঁজিতে সব থেকে জনপ্রিয় অনলাইন বিজনেস আইডিয়া। অনলাইনে বিজনেস করার ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরতে হবে কারণ হটাত করেই কোন বিজনেস থেকে টাকা আসে না।
অনলাইন বিজনেস আইডিয়া কার্যকর করবেন যেভাবে!
অনলাইনে বিজনেস করতে গেলে দক্ষতার প্রয়োজন। বিজনেস শুরু করেই লাভ উঠানো সম্ভব না। আপনি যেই ক্ষেত্রে ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন সেই ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করাটাই মূলকথা। এর জন্য দেশে অনেক ট্রেনিং ইন্সটিটিউট আছে ,অনলাইনে বই আছে।
পর্যাপ্ত দক্ষতা, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং জ্ঞ্যান ই পারে অনলাইন বিজনেস আইডিয়াকে কার্যকর ভাবে সফল করে তুলতে।
সফলতার প্রথম ধাপ বিজনেস আইডিয়া , দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপ গুলো কি কি !
পাঠককে অল্প পুজির বিজনেস আইডিয়া সরবরাহ করার পরেও কিছু ব্যাপার থাকে যা সকলের জানা প্রয়োজন। শুধুমাত্র বিজনেস আইডিয়া কি পারে কাউকে সফল করে দিতে? পারে না। ব্যবসায়ে সফলতা অনেকগুলি হিসাবের সমষ্টি।ব্যবসাকে যদি যুদ্ধক্ষেত্র কল্পনা করা হয় সেখানে বিজনেস আইডিয়া আপনার বর্ম ।
ভালো এবং সময়োপযোগী বিজনেস আইডিয়া শুধুমাত্র সফলতার পথকে সুগম করা দিতে পারে। আপনি ব্যবসায়ে নামার আগে জানা উচিত আপনি ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ত্ব কিনা! যদি আপনার কাজের ধরন ব্যবসার সাথে না মিলে তবে আপনাকে হারাতে হবে পুঁজি বা মূলধন ।
শুধুমাত্র চাকুরি করতেই যে যোগ্যতা লাগে, ব্যবসাতে লাগে না তা ভুল। ব্যবসা করতেও বিভিন্ন ধরনের যোগ্যতা প্রয়োজন ।
মনে রাখবেন সবাই ভালো বিজনেস আইডিয়া যেমন দিতে পারে না তেমনই সবাইকে দিয়ে ব্যবসা হয়ও না। ব্যবসা করতে হলে কিছু গুণাবলী থাকা লাগে তা হলঃ
- ধৈর্য
- সহনশীলতা
- চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা
- সহজে ভেঙে না পড়া
- নিত্য নতুন সৃজনশীল কাজ করা
- ভালো কিছু করার একাগ্রতা
- আত্মবিশ্বাস
পুজি+ আইডিয়া+ টেকনিক= সফল বিজনেস
ব্যবসাকে আকর্ষণীয় ভাবে গ্রাহক এর কাছে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে নিত্য-নতুন টেকনিক খুজে বের করতে হবে। যেমন আপনার যদি শাড়ির দোকান থেকে থাকে আপনি বিক্রয় বাড়ানোর জন্য দুটি শাড়ি একসাথে কিনলে কিছু ডিসকাউন্ট ঘোষণা করুন। অথবা সাথে কোন আকর্ষণীয় গিফট ঘোষণা করুন। দেখবেন আপনার বিক্রয় আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
এভাবে সারাবছর বিজনেস চালাতে গেলে আপনাকে নিত্য-নতুন টেকনিক এবং আইডিয়ার আশ্রয় নিতে হবে। সাদামাঠা ভাবে ব্যবসা শুরু করে ব্যবসা চালানো সম্ভব কিন্তু দ্রুত লাভবান হওয়া কষ্টকর।
এইসকল গুণাবলী যদি আপনার ভিতরে থেকে থাকে তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। আপনি পারেন উপরে বর্ণিত অল্প পুজির বিজনেস আইডিয়া গুলোকে কাজে লাগিয়ে সফল ব্যবসা সম্পাদনা করতে।
চাকরি এবং ব্যবসা সম্পর্কিত পরামর্শ এবং দিকনির্দেশনা পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে নিরাপদে থাকুন, সতর্ক থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।
More Stories
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি warpo job circular 2022
Manufacturing Excellence Engineer in VF Corporation (Dhaka, Bangladesh)
গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে ফ্রিল্যান্সিং করার উপায়