নেতার গুণাবলী | সফল নেতার কিছু গুন |সফল নেতা হওয়ার উপায় | নেতৃত্ব দানের কিছু উপায় | সফল নেতা হওয়ার উপায়
প্রাচীনকাল থেকেই একটা কথা মনেপ্রানে বিশ্বাস করা হত, সফল নেতার নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা হয় পরিবার থেকে না হয় স্রষ্টা থেকে পাওয়া। কিন্তু পরবর্তীতে কিছু ঘটনা আমাদেরকে একথা মানতে বাধ্য করেছে যে সফল নেতা হওয়ার জন্য পূর্বপুরুষ নেতা হওয়ার দরকার নাই, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই তা অর্জন করা যায়।
কিন্তু নেতা হবো বললেই ত দুম করে নেতৃত্ব দেওয়া যায়না। একজন সাধারণ মানুষ তখনই নেতার মর্যাদা পায় যখন তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস, দূরদর্শিতা, অধ্যাবসায়, সহনশীলতা আর সমাধান দেওয়ার গুন থাকবে। এসব গুন একদিনেই অর্জন করা যায় না।
এর জন্য কঠোর পরিশ্রম ও সতর্কতার দরকার। কারণ এমন কিছু জিনিষের মুখমুখি হতে হয় যখন মাথা ঠাণ্ডা করে অনেক চরম অপ্রীতিকর সিদ্ধান্ত নেওয়া লাগে।
আমরা কিছু সফল নেতা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানব। চলুন তাহলে শুরু করা যাকঃ
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিঃ
একজন নেতাকে সবসময় চ্যালেঞ্জের মধ্যদিয়ে যেতে হয়। যেকোনো নেতিবাচক বিষয় অবিশ্বাস্য দক্ষতার সঙ্গে মানিয়ে ইতিবাচক বিষয়গুলো তুলে এনে দলকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে।
বিখ্যাত ফ্রেঞ্চ লেখক ও পর্যটক এন্টনি ডি সেইন্ট বলেছেন,
“জাহাজ বানাতে চাইলে তোমার লোকদের কাজ ভাগ করে দিয়ে নির্দেশ দিতে থাকার বদলে, তাদের সমুদ্রের অপার সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখাও”
সকলের মত প্রকাশের সাধিনতাঃ
নেতা মানে এই না যে, সবসময় নিজের কথাই শোনাতে হবে; আরেকজনের মত প্রকাশের কোন সুযোগই থাকবেনা। এটা কোন সফল নেতার গুনাবলির মধ্যে পরেনা। তাই একজন নেতার উচিৎ সবার কাছ থেকে সর্বোওম সেবা পেতে চাইলে তাদের উন্মুক্তভাবে বিচরণ করার ও স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া।
চীন চীনা দার্শনিক লাও ঝুর মতে,
“শ্রেষ্ঠ নেতা সে-ই, যার অধীনে কোনওকিছু অর্জিত হলে তার সাথে জড়িত প্রতিটি মানুষই ভাবে যে তারা সবাই মিলে কাজটি করেছে”
সকলের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখাঃ
একজন দক্ষ নেতাকে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য ২৪/৭ যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি ঘটলে, নেতা ও অনুসারীদের মাঝে সন্দেহ আর ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। অনুসারীদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে, তাদের কাছাকাছি থাকতে হবে। বোঝাতে হবে তিনিও তাদের মতো একজন সাধারণ মানুষ। এটা করতে পারলে, তাদেরকে অনুপ্রাণিত করা যাবে।
ক্রিস হ্যাডফিল্ড (একজন ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের সাবেক কমান্ডার) বলেন,
“নেতৃত্ব মানে কঠিন সময়েও তোমার টিমকে তাদের সেরা কাজটি দিয়ে কিছু অর্জন করার জন্য অনুপ্রাণিত রাখতে পারা”
অন্যদের জানার ও বোঝার ক্ষমতা :
একজন নেতাকে অবশ্যই অন্যের আবেগ-অনুভূতি বুঝতে পারা ও সেই অনুযায়ী তার সাথে কাজ করার প্রচেষ্টা থাকতে হবে। আপরের ভিতর লুকিয়ে থাকা সুপ্ত ক্ষমতা বুঝে সেই ক্ষমতার যথাযোগ্য কাজে কাজে লাগাতে সাহায্য করাই একজন নেতার নিজের যোগ্যতাকেই ফুটিয়ে তোলে।
মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বলেন,
“নেতাদের উচিৎ তার লোকদের জ্ঞান ও চিন্তাশক্তি বাড়ানোর জন্য দিক নির্দেশনা দেয়া। সব সিদ্ধান্ত নেতাদের একার নেয়া উচিৎ নয়”
নতুন কিছু করার চেষ্টাঃ
জিনিসকে একটু অন্যভাবে চিন্তা করে নতুন কিছু করার চেষ্টা একজন সফল নেতার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।
কোন কিছুতে একটি সাধারণ কার্যপদ্ধতি মেনে চলা উচিত, কিন্তু সেই সাথে এটাও চিন্তা করা উচিত যে কীভাবে কাজ করলে আরো ভালো ফল আসবে। এভাবে নেতার সফলতা আসে তিনি অর্জন করেন শ্রদ্ধাও।
ইন্দ্রা নূরী (সাবেক সিইও, পেপসিকো) বলে গেছেন,
“একজন নেতা হিসেবে আমি নিজে অতিরিক্ত কষ্ট করি, যাতে অন্যরাও তা দেখে নিজের সেরাটা দিতে উৎসাহিত হয়”
কাজের উতসাহ প্রদানঃ
সবার মেধার মূল্যায়নের জন্য তাদের সৃজনশীলতাকে উৎসাহ দিতে হবে। তাদের চিন্তা ও নতুন ধারণা সৃষ্টির স্বাধীনতা দিতে হবে। একজন আদর্শ নেতা নিজের চিন্তাধারা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেন এবং অন্যদেরটাও গ্রহণ করেন।
ক্রিস হ্যাডফিল্ড (ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের সাবেক কমান্ডার) ের মতে,
“নেতৃত্ব মানে কঠিন সময়েও তোমার টিমকে তাদের সেরা কাজটি দিয়ে কিছু অর্জন করার জন্য অনুপ্রাণিত রাখতে পারা”
স্বচ্ছদৃষ্টিভঙ্গিবজায় রাখুনঃ
সত্যিকার নেতারা জানেন, মুখে নয় কাজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সদস্যদের মনে স্থান করে নিতে হয়। কর্মীদের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে নেতাদের কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হয়।
এছাড়াও,লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং কর্মপন্থা কর্মীদের কাছে স্পষ্ট রাখাটা একটি সুষ্ঠু নেতৃত্বের পরিচায়ক।
জেনারেল ইলেকট্রিকের সাবেক সিইও জ্যাক ওয়েলচ বলেছেন,
“নেতারা নিরপেক্ষতা ও সততা দিয়ে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে”
সরাসরি কথা বলা এবং প্রতিক্রিয়া জানাঃ
দলের সদস্যদের সঠিক নির্দেশনা দিতে স্পষ্টভাষী হওয়া, আর কাজের সঠিক প্রতিক্রিয়া সদস্যদের জানানো একটা সফল নেতৃত্বের অংশ।
কখনো ব্যক্তিগত সম্পর্কের আগে কাজের গুরুত্ব দিয়ে দলের সদস্য ও কাজের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের কাছে থেকে কাজের প্রতিক্রিয়া জানতে হবে।
আপনার নেতৃত্বের সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে কিনা সেটা বোঝা এবং নিজের ভুল সংশোধন করে কাজ করাটাই সঠিক নেতার একটা গুন।
কনফুশিয়াস (প্রাচীন চীনা দার্শনিক) বলেন,
“একজন সত্যিকার নেতা তার কথায় বিনীত, কিন্তু কাজে আক্রমণাত্মক”
এছাড়াও আপনি Strategies For A Better Career : work on it daily পড়তে পারেন।
Connect with us through Facebook, LinkedIn
More Stories
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি warpo job circular 2022
Manufacturing Excellence Engineer in VF Corporation (Dhaka, Bangladesh)
গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে ফ্রিল্যান্সিং করার উপায়